সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

অক্টোবর, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

কোরিয়া যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো।

সূচনা: ১৯৪৫ সালে কোরিয়াবাসীর অনুমতি ছাড়াই কোরিয়াকে উত্তর ও দক্ষিণ ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। এর ফলে সৃষ্টি হয় কোরিয়া সংকট বা কোরিয়া যুদ্ধ। কোরিয়া যুদ্ধের কারণ [1] রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান সম্পূর্ণরূপে পরাজিত হয়। ফলে জাপান অধিকৃত কোরিয়ার উত্তরাংশ রাশিয়ার কাছে এবং দক্ষিণাংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এসময় থেকে কোরিয়ার ৩৮° উত্তর অক্ষরেখার উত্তরাংশে রাশিয়া এবং ৩৮° উত্তর অক্ষরেখার দক্ষিণাংশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। [2] অস্থায়ী কমিশনের ব্যর্থতা : কোরিয়ার সমস্যা নিয়ে মস্কোতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। (১৯৪৫ খ্রি., ডিসেম্বর)। এই বৈঠকে উভয় রাষ্ট্র এক যুগ্ম কমিশন গঠনের কথা বলে। এই কমিশনের নেতৃত্বে কোরিয়ার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এক অস্থায়ী স্বাধীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু এই উদ্যোগ শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হয়। [3] কোরিয়ায় দুই সরকার প্রতিষ্ঠা : অস্থায়ী কমিশনের উদ্যোগ ব্যর্থ হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ...

ঠান্ডা লড়াই বলতে কী বোঝো ? ঠান্ডা যুদ্ধের তাত্ত্বিক ধারণাগুলি ব্যাখ্যা করো ।

ঠান্ডা লড়াই:   দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকার নেতৃত্বে ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট ও সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোটে গোটা বিশ্ব বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই দ্বিমেরুকরণ রাজনীতি ঠান্ডা লড়াই (cold war) নামে পরিচিত। ঠান্ডা যুদ্ধের তাত্ত্বিক ধারণাসমূহ মার্কিন যুক্তিরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রজোটের মধ্যে সংঘটিত ঠাণ্ডা যুদ্ধের চরিত্র বা এই যুদ্ধের দায়বদ্ধতা নিয়ে ইতিহাসবিদ ও রাষ্ট্রতত্ত্ববিদদের মধ্যে পরস্পরবিরোধী ধারণা লক্ষ করা যায়। এই পরস্পরবিরোধী ধারণাগুলিই হল ঠান্ডা যুদ্ধের তাত্ত্বিক ধারণা। ঠান্ডা যুদ্ধের তাত্ত্বিক ধারণাগুলি নীচে আলোচনা করা হলো। [1] চিরায়ত বা ঐতিহ্যবাহী ধারণা: সমর্থকগণ: ঐতিহ্যবাহী ধারণার সমর্থকগণ হলেন—মার্কিন রাষ্ট্রদূত জর্জ এফ. কেন্নান, হার্বার্ট ফিস, ম্যাক্সিম লিটভিনভ, জন স্পেনিয়ার, উইলিয়াম এইচ. ম্যাকলিন, মার্টিন ম্যাককাউলে, জে. আর ম্যাককারণি, জন ডব্লিউ, ম্যাসন প্রমুখ। মূল বক্তব্য : ঐতিহ্যবাহী ধারণার মূল বক্তব্য হল – ঠান্ডা লড়াইয়ের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অপেক্ষা সোভিয়েত ইউনিয়নই বেশি দায়ী। এই ধারণা অনুযায়ী মার্কসবাদ ও...

ঠান্ডা লড়াই (Cold War) বলতে কী বোঝো ? ঠান্ডা লড়াই এর কারণ বা পটভূমি আলোচনা করো।

ঠাণ্ডা লড়াই পরিচিতি : ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়। এরপর বিজয়ী মিত্রশক্তিবর্গ দুটি পরস্পরবিরোধী রাষ্ট্রগোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে বিশ্বে এক অভিনব রাজনৈতিক বাতাবরণ সৃষ্টি করে। এই দুই শিবিরের একদিকে থাকে সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট, অপরদিকে থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমি ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট। বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক ও সামরিক আধিপত্য গড়ে তোলার জন্য এই দুই রাষ্ট্রজোটের মধ্যে যে গোপন লড়াই শুরু হয় তা ঠান্ডা লড়াই নামে পরিচিত। রুশ বিদেশমন্ত্রী ম্যাক্সিম লিটডিনভ-এর মতে—আদর্শগত ধ্যানধারণাই ঠান্ডা যুদ্ধের উদ্ভবের জন্য দায়ী। অধ্যাপক এফ. এইচ. হার্টম্যান-এর মতে—দুই মহাশক্তির দৃষ্টিভঙ্গি ও তত্ত্বগত পার্থক্য ঠান্ডা লড়াই-এর উদ্ভব ঘটায়। ঠান্ডা লড়াইয়ের কারণ / পটভূমি ঠান্ডা লড়াইয়ের এই উদ্ভবের ব্যাখ্যাগুলিকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। এগুলি হল- [1] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী;[2] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন এবং [3] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী পর্যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী পর্যায়:   রুশ বিপ্লবের সময় থেকেই বল...

হাে-চি-মিনের নেতৃত্বে ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

ভূমিকা : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়কালে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইতিহাসে এক দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত ছিল ভিয়েতনাম যুদ্ধ। হো-চি-মিনের নেতৃত্বে, ভিয়েতনামবাসীরা দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে (১৯৪৫-৭৫ খ্রি.) যে সংগ্রাম চালিয়েছিল তা ইতিহাসে ভিয়েতনাম যুদ্ধ নামে পরিচিত। তৃতীয় বিশ্বের উপনিবেশবাদ-বিরোধী সংগ্রামকে গৌরবান্বিত করেছিল এই ভিয়েতনাম যুদ্ধ। ভিয়েতনাম যুদ্ধে ভিয়েতনামিরা প্রথমে ফরাসি সাম্রাজ্যবাদ ও পরে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকে ধ্বংস করে স্বাধীনতা অর্জন করে। ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধ [1] পটভূমি    যেসব ঘটনা ভিয়েতনাম যুদ্ধের পটভূমি রচনায় সাহায্য করেছিল, সেগুলি হল- [i] দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ঔপনিবেশিক বিরোধিতা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্তর্গত মালয়, শ্যাম (থাইল্যান্ড), ব্রহ্মদেশ (মায়ানমার) সহ বিভিন্ন দেশে উপনিবেশ-বিরোধী সম্মেলন শুরু হয়েছিল। যার অংশীদার হয়েছিল হো-চি-মিনের নেতৃত্বে ভিয়েতনামও।  [ii] রুশ-জাপান যুদ্ধের ফলাফল: রুশ-জাপান যুদ্ধের ফলাফল জাপানের অনুকূলে যাওয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াবাসীর মতো ভিয়েতনামবাসীর মন থেকেও শ্বেতাঙ্গ ভীতি দূর হয়। তারা বিশ...

ভারত ছাড়ো আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভূমিকা : ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায় হল ভারত ছাড়ো বা আগস্ট আন্দোলন । সিপাহি বিদ্রোহের পর এত বড়ো গণ আন্দোলন ভারতে আর ঘটেনি। গান্ধিজি 'হরিজন' পত্রিকাতে লিখলেন (১৯৪২ খ্রি, ২ এপ্রিল) ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান চাই। ভারতের স্বাধীনতা চাই কেবল ভারতের স্বার্থে নয়—বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য, নাৎসিবাদ, ফ্যাসিবাদ, সমরবাদ, সাম্রাজ্যবাদ এবং এক জাতির ওপর অন্য জাতির আক্রমণের অবসানের জন্য ভারত ছাড়ো আন্দোলন  পটভূমি: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকায় ক্রিপস প্রস্তাবের আগমন ও প্রস্থান, ভারতবাসীর তীব্র স্বাধীনতা- আকাঙ্ক্ষা, মূল্যবৃদ্ধি, জাপানি আক্রমণের ভয়, ব্রিটিশ সেনাদের অত্যাচার সবকিছু মিলেমিশে এক ভবিষ্যৎ গণ আন্দোলনের পটভূমি রচনা করে। গান্ধিজি নিজে এই আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য মরিয়া ছিলেন। তিনি বলেন ভারতকে ঈশ্বরের হাতে সমর্পণ করে ব্রিটিশরা ভারত ছেড়ে চলে যাক। যদি তা না হয় তবে অরাজকতাও শ্রেয়, আপনারা ভারত ছাড়ুন।  আন্দোলনের সূচনা : বোম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত (১৯৪২ খ্রি., ৮ আগস্ট) নিখিল ভারত কংগ্রেস সমিতির বিপুল ভোটে গান্ধিজির ভারত ছাড়ো প্রস্তাব পাস হয়। ঘোষণা করা হয় ৯ আগস্...

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কারণ ও গুরুত্ব আলোচনা করো।

ভূমিকা: ভারতের জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সর্বশেষ বৃহৎ মরিয়া গণ প্রচেষ্টা হল ভারত ছাড়ো আন্দোলন। গান্ধিজি ব্রিটিশ সরকারের উদ্দেশ্যে 'হরিজন' পত্রিকায় লেখেন (১৯৪২ খ্রি., ২৪ মে) – ভারতকে ঈশ্বরের হাতে ছেড়ে দাও, না হলে তাকে নৈরাজ্যের হাতে ছেড়ে চলে যাও (Leave India to God. If that is too much, then leave her. to anarchy')। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের পটভূমি / কারণ  [1] ক্রিপস প্রস্তাবের ব্যর্থতা : ক্রিপস প্রস্তাবের ব্যর্থতায় ভারতবাসী অনুভব করে যে—ইংরেজ সরকার কখনোই স্বেচ্ছায় তাদেরকে স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেবে না। তাই স্বাধীনতা পেতে হলে সরাসরি ইংরেজদের সঙ্গে সংগ্রামে লিপ্ত হওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ নেই। [2] ব্রিটিশ দমননীতি : ব্রিটিশ সরকার তার সামরিক বাহিনী দ্বারা ভারতবাসীর ওপর যে অকথ্য নির্যাতন, অত্যাচার চালিয়ে আসছিল তাতে ভারতীয়রা বিক্ষুদ্ধ হয়ে মুক্তির পথ খুঁজতে শুরু করেছিল। ব্রিটিশরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয়দের কালা আদমি বলে উপেক্ষা করে আসার পাশাপাশি ভারতীয় নারীদের প্রতি অশালীন আচরণ শুরু করলে ভারতীয়দের ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। [3] দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প...

মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা কী ? এই পরিকল্পনার মাধ্যমে কীভাবে ভারত বিভাগ করা হয় ? এই পরিকল্পনার বিষয়ে ভারতীয় নেতাদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?

ভূমিকা : স্বাধীনতা লাভের জন্য ভারতবাসীর তীব্র আকাঙ্ক্ষা, সংগ্রাম ব্রিটিশকে বাধ্য করে স্বাধীনতাদান প্রশ্নের মীমাংসা করতে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার অবসান ঘটাতে ব্রিটিশ সরকার দেশভাগ অনিবার্য বলে মেনে নেয়। জিন্নার পাকিস্তান রাষ্ট্রের দাবির প্রতি আকাঙ্ক্ষা এবং তাতে জওহরলাল ও প্যাটেলের সম্মতি থাকায় মাউন্টব্যাটেনের উপদেষ্টা লর্ড ইসম ভারতভাগের পরিকল্পনা পাঠান ব্রিটিশ পার্লামেন্টে (১৯৪৭ খ্রি., ২ মে)। পার্লামেন্টে প্রস্তাবটি ‘ভারতীয় স্বাধীনতা আইন’ রূপে পাস হয় (যদিও রাজকীয় সম্মতি লাভ করে ১৯৪৭ খ্রি., ১৮ জুলাই), যা  ‘মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা’  হিসেবে পরিচিত। মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার চূড়ান্ত পরিণাম দেশভাগ। এ প্রসঙ্গে ড. বিপান চন্দ্র বলেছেন—আমরা এটা ভুলে গিয়েছিলাম যে, ১৯৪৭-এ নেহরু, প্যাটেল ও গান্ধিজি শুধু যা অবশ্যম্ভাবী তাকেই মেনে নিয়েছিলেন।  মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা পটভূমি    [1] মাউন্টব্যাটেনের আগমন : ভারতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কাজ দ্রুত সম্পাদনের জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্ট লর্ড ওয়াভেলের জায়গায় লর্ড মাউন্টব্যাটেনকে ভাইসরয় নিয়োগ করে ভারতে পাঠায় (২৪ মার্চ, ১৯৪৭ খ্রি.)।...

ক্রিপস মিশন কী ? ক্রিপস মিশন ব্যর্থতার কারণ

ক্রিপস মিশন  ব্রিটিশ মন্ত্রীসভার সদস্য স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসের নেতৃত্বে ক্রিপস্ মিশন ভারতে আসে (১৯৪২ খ্রিস্টাব্দ) ও ভারতকে স্বায়ত্তশাসন প্রদানের লক্ষ্য নিয়ে ২৯ মার্চ একগুচ্ছ প্রস্তাব পেশ করে যা ক্রিপস প্রস্তাব নামে পরিচিত। ক্রিপস মিশনের উদ্দেশ্য:   দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগদান করে জাপান অতি দ্রুত দ.পূ. এশিয়ার এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল অধিকার করে ভারতের দ্বারপ্রান্তে এসে হাজির হয়। এমতাবস্থায় জাপানকে প্রতিহত করতে মিত্রশক্তির পক্ষে ভারতের সক্রিয় সাহায্য লাভের আশায় চার্চিল তাঁর মন্ত্রীসভার সদস্য স্ট্যাফোর্ড ক্রিপকে ভারতে পাঠান (মার্চ, ১৯৪২ খ্রি.)। মিত্রশক্তিকে ভারত যাতে সমস্ত দিক দিয়ে সাহায্য দেয়, তাতে রাজি করানোই ছিল ক্রিপসের ভারত আগমনের প্রধান কারণ বা তাঁর প্রস্তাবগুলির মূল লক্ষ্য। ক্রিপস প্রস্তাবের ব্যর্থতার কারণ ক্রিপস প্রস্তাব শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিল, কারণ—  [1] পূর্ণ স্বাধীনতা দানের অনুল্লেখ : এই প্রস্তাবটিতে পূর্ণ স্বাধীনতা দানের কোনো উল্লেখ ছিল না। ব্রিটিশ সরকার, বিশেষত চার্চিলের অনিচ্ছুক মনোভাব এই প্রস্তাবকে ব্যর্থ করেছিল। তিনি কখনোই চাননি ভারত স্বাধীন হোক। আসলে এ...

মন্ত্রী মিশন বা ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা কী ছিল ?

সূচনা : ভাইসরয় লর্ড ওয়াভেলের পরিকল্পনা অনুসারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর নতুন ব্রিটিশ মন্ত্রীসভা ভারতীয় নেতৃবর্গের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার জন্য তার তিনজন সদস্যকে ভারতে পাঠাবার সিদ্ধান্ত নেয় (১৯৪৬ খ্রি., ২৪ মার্চ)। ভারত-সচিব লর্ড পেথিক লরেন্স , বাণিজ্য- সচিব স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস এবং নৌ-সচিব মি. এ. ভি. আলেকজান্ডার —এই তিনজন মন্ত্রীকে নিয়ে গড়া উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এই দলটি ভারত-ইতিহাসে ক্যাবিনেট মিশন বা মন্ত্রী মিশন (১৯৪৬ খ্রি.) নামে খ্যাত। মন্ত্রী মিশনের উদ্দেশ্য:  মন্ত্রী মিশনের উদ্দেশ্য ছিল প্রধানত দুটি– [1] ভারতকে স্বাধীনতা দান এবং ভবিষ্যৎ সংবিধান রচনার জন্য যে গণপরিষদ তৈরি হবে তার গঠন, পদ্ধতি ও নীতি নির্ধারণ করা।  [2] ভারতের সকল রাজনৈতিক দলগুলির বৃহত্তর মতৈক্যের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালের জন্য একটি জনপ্রতিনিধিভিত্তিক সরকার গঠন করা। মন্ত্রী মিশনের প্রস্তাব   মন্ত্রী মিশনের প্রধান প্রস্তাবগুলি হলো—  [1] যুক্তরাষ্ট্র গঠন: ভারতে একটি দ্বিস্তরবিশিষ্ট যুক্তরাষ্ট্র গঠিত হবে। দেশীয় রাজ্যগুলি এই যুক্তরাষ্ট্রে যোগ দিতে পারবে।  [2] ক্ষমতা বন্টন: কেন্দ্র ও প্রাদেশিক সর...

ক্রিপস মিশন কেন ভারতে এসেছিল ? ক্রিপস মিশনের প্রস্তাব‌ গুলি কী ছিল ? এক্ষেত্রে ভারতীয়দের কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল ?

সূচনা : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ভারতের ব্রিটিশ সরকার ভারতবাসীর আর্থিক ও সামরিক সাহায্য প্রার্থনা করে। যদিও কংগ্রেস এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়, ফলে এক রাজনৈতিক অচলাবস্থা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ মন্ত্রীসভার সদস্য স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসের নেতৃত্বে ক্রিপস মিশন ভারতে আসে (১৯৪২ খ্রি.) ও এক প্রস্তাব পেশ করে যা ক্রিপস প্রস্তাব নামে পরিচিত। ক্রিপস্ প্রস্তাব সম্পর্কে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল বলেছিলেন—আমাদের সততা প্রমাণের জন্যই ক্রিপস মিশন অপরিহার্য ('The Cripps Mission is indispensable to prove our honesty of purpose') ! পটভূমি / কারণ    ক্রিপস্ মিশনের ভারতে আসার পটভূমি বা কারণগুলি হলো –  [1] জাপানি আক্রমণ প্রতিরোধ : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন (১৯৪১ খ্রি., ৭ ডিসেম্বর) জাপান হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের পার্লহারবারে অবস্থিত মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করে অক্ষশক্তির পক্ষে যুদ্ধে যোগদান করলে বিশ্ব রাজনীতিতে এক গুরুতর পরিবর্তন ঘটে। একে একে ফিলিপাইন, ইন্দোচিন, ইন্দোনেশিয়া, মালয় ও ব্রহ্মদেশ বিধ্বস্ত করে (১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ মার্চ) জাপান ভারতের নিকটে এসে হাজ...

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলার (১৯২৯ খ্রি.) প্রেক্ষাপট আলোচনা করো। এই মামলাটির পরিণতি কী হয়েছিল?

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা কমিউনিস্ট পার্টির কার্যকলাপ ও তাদের নেতৃত্বাধীন শ্রমিক আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে সরকার ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ৩২ জন কমিউনিস্ট শ্রমিক নেতাকে গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। এটি ‘মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা’  নামে পরিচিত। মিরাট ষড়যন্ত্র মামলার প্রেক্ষাপট সূচনা: ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরা জন্মলগ্ন থেকেই কৃষক ও শ্রমিকশ্রেণির মঙ্গলের জন্য সচেষ্ট ছিলেন। শুধু তাই নয়, তাঁরা এই দুই শ্রেণিকে জাতীয় আন্দোলনের মূলধারায় শামিল করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ভারত সরকারের এক রিপোর্ট থেকে জানা যায় — শ্রমিকশ্রেণির মধ্যে সাম্যবাদী আদর্শের প্রচার ও প্রভাব সরকারের পক্ষে গভীর চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিরাট ষড়যন্ত্র মামলার প্রেক্ষাপট গুলি নিচে উল্লেখ করা হলো – [1] শ্রমিক আন্দোলন: ভারতের বিভিন্ন কলকারখানায় কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে শ্রমিক অসন্তোষ বাড়তে থাকে। কমিউনিস্ট নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের অভাব-অভিযোগ নিয়ে আন্দোলনে সরব হলে ভারতের বিভিন্ন কলকারখানার শ্রমিকরা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে আন্দোলনে শামিল হয়। শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি প্রদান, কাজের সময় হ্রাস, বিনা ক্ষতিপ...

জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট ও গুরুত্ব আলোচনা করো।

জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের পটভূমি  সূচনা: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ কর্তৃক প্রবর্তিত রাওলাট আইনের চরম পরিণতি ছিল জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড। পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগ উদ্যানে এই কুখ্যাত আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এক শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আহূত হয়, যেখানে জেনারেল ডায়ারের নেতৃত্বে ব্রিটিশের ঘাতক পুলিশবাহিনী গুলি চালিয়ে শান্তিপূর্ণ জমায়েতকে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে পরিণত করে। এই কুখ্যাত ঘটনাটি ইতিহাসে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত। ঐতিহাসিক টমসন ও গ্যারাটের মতে—জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনা সিপাহি বিদ্রোহের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও যুগান্তকারী। এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের পটভূমি নীচে উল্লেখ করা হল— [1] পাঞ্জাবে নির্যাতন: জুলুম চালিয়ে যুদ্ধের জন্য পাঞ্জাব থেকে সেনা ও অর্থ সংগ্রহ, ‘গদর' বিদ্রোহ প্রতিরোধ প্রভৃতি উদ্দেশ্যে সরকার পাঞ্জাবে তীব্র দমনপীড়ন চালালে পাঞ্জাব ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পাঞ্জাবের কর্মচ্যুত সেনাদের সমাবেশে এই ক্ষোভ তীব্র হয়ে ওঠে। এই অবস্থায় পাঞ্জাবের গভর্নর মাইকেল ও ডায়ারের অত্যাচারী শাসন পাঞ্জাবকে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে পরিণত করে। [2] রাওলাট আইন: ভারতীয়দের স্বাধীন...

১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের প্রেক্ষাপট ও শর্তাবলি আলোচনা করো। এই আইনের গুরুত্ব কী ছিল ?

১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের প্রেক্ষাপট সূচনা: ব্রিটিশ সরকার ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে ভারত-বিষয়ক যে গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়ন করে তা ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন নামে পরিচিত। সরকার ঘোষণা করে যে, ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের ১ এপ্রিল থেকে এই আইন কার্যকরী হবে। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন উপাদান সক্রিয় ছিল। যেমন— [1] মন্ট-ফোর্ড আইনের ব্যর্থতা: ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু- চেমসফোর্ড আইন প্রণয়নের পরবর্তীকালে ভারতীয় রাজনীতিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে যায়। এই আইন ভারতীয়দের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হলে গান্ধিজির নেতৃত্বে সারা ভারতে প্রবল গণ আন্দোলন শুরু হয়। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এই সময় বিপ্লববাদী কার্যকলাপও যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদের প্রসার ব্রিটিশ সরকারকে ভাবিয়ে তোলে। [2] সাইমন কমিশনের রিপোর্ট:  এই সময় ভারতীয়রা স্বায়ত্তশাসন লাভের উপযুক্ত কিনা তা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে সাইমন কমিশন ভারতে আসে। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে কমিশনের রিপোর্টে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের ওপর সুপারিশ করা হয়। [3] গোলটেবিল বৈঠক: সাইমন কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিত...

পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে চিনে বুদ্ধিজীবী শ্রেণির উদ্ভব কীভাবে হয়? চিনের তাইপিং বিদ্রোহ সম্পর্কে একটি টীকা লেখো।

চিনে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে বুদ্ধিজীবী শ্রেণির উদ্ভব  [1] আধুনিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা: চিনে বিদেশি বণিকদের সীমাহীন শোষণ ও লুণ্ঠনের ফলে চিনবাসী জর্জরিত হয়। এই পরিস্থিতিতে সচেতন চিনা নাগরিকগণ উপলব্ধি করেন যে, আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা ও বিজ্ঞানচর্চা ছাড়া চিনের অগ্রগতি সম্ভব নয়। [2] মিশনারিদের আগমনের সূচনা: নানকিং-এর সন্ধির আগে থেকেই চিনে খ্রিস্টান মিশনারিদের আগমন শুরু হয়। রবার্ট মরিসন ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে চিনে আসেন এবং চিনা ভাষায় বাইবেল অনুবাদ করেন। আমেরিকার খ্রিস্টান মিশনারিদের মধ্যে এলিজা কোলম্যান ব্রিজম্যান ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম চিনে আসেন এবং চিনে খ্রিস্টান সাহিত্য প্রসারের উদ্দেশ্যে একটি মুদ্রণযন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। মিশনারি পিটার পার্কার ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে চিনে এসে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে টি. রিচার্ড, জে. অ্যালেন, আলেকজান্ডার উইলিয়ামসন, এ. পি. মার্টিন প্রমুখ মিশনারি চিনে এসে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষ প্রসারের কাজ করেন। [3] পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার : খ্রিস্টান মিশনারি ও চিনা বুদ্ধিজীবীদের উদ্যোগে চিনে পাশ্চাত্য শিক্ষার দ্রুত প্রসার ঘটতে থাকে। ইংরেজি ফরাস...

আলিগড় আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা করো । অথবা, আলিগড় আন্দোলন স্যার সৈয়দ আহমেদ এর ভূমিকা আলোচনা করো

সূচনা: উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে সমগ্র ভারত জুড়ে যে ধর্ম ও সমাজসংস্কার আন্দোলনের ঢেউ ওঠে তা ভারতের মুসলমান সমাজের ওপরও আছড়ে পড়ে। সৈয়দ আহমেদ সমাজে পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের সার্বিক উন্নয়ন ঘটানোর জন্য যে সংস্কার আন্দোলন পরিচালনা করেন তা ইতিহাসে আলিগড় আন্দোলন নামে পরিচিত।  আন্দোলনের পটভূমি : ব্রিটিশ রাজত্বের প্রথমদিকে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক মোটেই ভালো ছিল না। ব্রিটিশ সরকার মহাবিদ্রোহের জন্য মুসলিমদের বেশি দায়ী করেছিল। অপর দিকে মুসলমানরা ভারতে ব্রিটিশ শাসনকালে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রবর্তনকে সন্দেহের চোখে দেখত। পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত না হওয়ায় সরকারি চাকরির উচ্চপদগুলি প্রভাব-প্রতিপত্তি সবদিক থেকে মুসলিম সম্প্রদায় হিন্দুদের তুলনায় অনেক গুণ পিছিয়ে পড়ে। আলিগড় কলেজে অধ্যক্ষ থিয়োডোর বেকের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে সৈয়দ আহমেদ খাঁ পিছিয়ে পড়া মুসলিমদের নিয়ে আলিগড় কলেজকেন্দ্রিক এক আন্দোলন গড়ে তোলার প্রচেষ্টা নেন। আন্দোলনের ভিত্তি : আলিগড় আন্দোলন চারটি মৌলিক নীতির ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। মুসলিম স্বার্থ : ভারতের হিন্দু ও মুসলমান আলাদা দুই জাতি, তাদের পারস্পরিক স্বার্থও আলাদা—...

মর্লে মিন্টো সংস্কার আইন 1909 খ্রিস্টাব্দ – ভারতীয় কাউন্সিল অ্যাক্ট সম্পর্কে আলোচনা করো।

সূচনা: বঙ্গভঙ্গের পরে ভারতীয় রাজনীতিতে চরমপন্থা ও সশস্ত্র বৈপ্লবিক ধারার উদ্ভব ঘটলে ব্রিটিশ বিভিন্নভাবে ভারতীয়দের সঙ্গে আপস মীমাংসার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। এই সূত্রেই ভারত-সচিব জন মর্গে এবং বড়োলাট মিন্টো ভারতের শাসনতান্ত্রিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে যে সংস্কার আইন প্রবর্তন করেন (১৯০৯ খ্রি.) তা মর্লে- মিন্টো শাসন সংস্কার বা ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের কাউন্সিল আইন নামে পরিচিত। এই শাসনসংস্কার নীতির দ্বারা ব্রিটিশ হিন্দু-মুসলিম বিভেদনীতিকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় আন্দোলনের প্রসার রোধ করতে চেয়েছিল। আইন প্রবর্তনের কারণ এই শাসনসংস্কার আইনটির পটভূমি বিশ্লেষণে দেখা যায় — (১) ১৯০৭ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সুরটি অধিবেশনে নরমপন্থী বা মডারেটদের পাশাপাশি চরমপন্থী বা এক্সট্রিমিস্টদের উদ্ভব ঘটে। এই দ্বন্দ্বকে কাজে লাগানোর সুযোগ পায় ব্রিটিশ। (২) সশস্ত্র বিপ্লবী ভাবধারায় উদ্‌বুদ্ধ হয়ে বাংলা ও মহারাষ্ট্রে গোপন বিপ্লবী সংঘ প্রতিষ্ঠা ও প্রকাশ্যে রাজনৈতিক হত্যার ঘটনা শুরু হয়, যা ব্রিটিশের কাছে ছিল সন্ত্রাসবাদ। (৩) আগাগোড়াই মুসলিম নেতারা জাতীয় কংগ্রেসের বিরোধিতা করেছিল বা জাতীয় কংগ্রেস থেকে দূরে স...

চীনের ৪ ঠা মে আন্দোলনের কারণ ও প্রভাব আলোচনা করো।

সূচনা: বিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকে চিনে রাজতন্ত্রী ও প্রজাতন্ত্রী বিপ্লবীদের মধ্যে প্রবল সংগ্রাম শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে চিনে বিদেশিদের আধিপত্যের অবসানের লক্ষ্যে সেদেশে প্রবল এক বৌদ্ধিক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ৪ মে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ৪ মে-র আন্দোলন (May Fourth Movement) নামে পরিচিত। ৪ মে-র আন্দোলনের কারণ [1] ইউয়ান-সি-কাই-এর নৃশংসতা: চিনে ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পর চিনের রাষ্ট্রপতি সান-ইয়াৎ-সেন দেশের গৃহযুদ্ধ এড়াতে ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের ১২ ফেব্রুয়ারি সমরনায়ক ইউয়ান-সি-কাই- এর সমর্থনে স্বেচ্ছায় রাষ্ট্রপতির পদ ত্যাগ করেন। কিন্তু ইউয়ান-সি-কাই চিনের ক্ষমতা লাভের পর ধীরে ধীরে চিনে সামরিক একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং চিনে বিদেশিদের বিভিন্ন সুবিধা দেন। তিনি তাঁর বিরোধীদের একে একে হত্যা করেন। কুয়োমিনতাং দলের নেতা মুং চিয়াও-জেন নিহত হলে তাদের সরকার গঠনের আশা ভঙ্গ হয়। ফলে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটেন, ফ্রান্স, জাপান-সহ কয়েকটি দেশ ইউয়ান সরকারকে যথেষ্ট পরিমাণ ঋণ দেয়। [2] কুয়োমিনতাং দল নিষিদ্ধ: চিনে গৃহযুদ্ধ এড়িয়ে শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে স...