সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ফিজিওক্রাটস কারা ছিলেন ?

ফিজিওক্রাটস     রাজনৈতিক চিন্তার বাইরে অর্থনৈতিক চিন্তাও অষ্টাদশ শতকের ফ্রান্সে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল। সপ্তদশ শতকে ও অষ্টাদশ শতকের গোড়ায় অর্থনৈতিক তত্ত্বের মূল ভিত্তি ছিল মার্কেন্টাইলবাদ। মার্কেন্টাইলবাদী তত্ত্ব সংরক্ষণবাদী অর্থনীতিকে সমর্থন করত। কিন্তু নতুন প্রজন্মের অর্থনীতিবিদরা মার্কেন্টাইলবাদী তত্ত্বকে খারিজ করে ধ্রুপদী অর্থনৈতিক উদারবাদের ভিত্তি প্রস্ত্র স্থাপন করেছিল। স্কটিশ অর্থনীতিবিদ এডাম স্মিথ যাবতীয় বাধানিষেধ থেকে অর্থনীতিকে মুক্ত করার কথা বলেন। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি নূন্যতম রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের পক্ষপাতী ছিলেন এবং মুক্ত বাজার প্রতিযোগিতা ও অবাধ বাণিজ্যকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। তাঁর অর্থনৈতিক চিন্তা "Laissez-faire" নামে পরিচিত।      সমকালীন ফ্রান্সেও একদল অর্থনৈতিক চিন্তাবিদও একই ধরণের অর্থনীতির কথা বলেছিলেন। তাঁদের বলা হত ফিজিওক্র্যাট অর্থনীতিবিদ। ফিজিওক্রাট চিন্তাবিদরা প্রচার করেছিলেন, সম্পদের উৎস সোনা বা রুপা নয়; একমাত্র জমিই সম্পদের উৎস। তাঁরা কৃষিতে ও কৃষিপণ্যের বাণিজ্যে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের তীব্র বিরোধী ছিলেন। ফ্রান্সে ফিজিওক্রাট চিন্তাধার...

কার্লসবার্ড ডিক্রি কি

কার্লসবার্ড ডিক্রি   অস্ট্রিয়ার রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী মেটারনিকের জার্মানী সম্পর্কে অত্যন্ত কঠোর নীতির মূল কথা ছিল জার্মানীর প্রত্যেকটি রাষ্ট্রের স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করা, জার্মানীকে দুর্বল ও খণ্ডিত রেখে জার্মানীর ঐক্যবন্ধনের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করা। ইউরোপে মুক্তি সংগ্রামের সময় জার্মানদের জাতীয়তাবাদী মনোভাব যেরূপ উদ্দীপ্ত হয়ে উঠেছিল, ভিয়েনা বন্দোবস্ত তা চরিতার্থ করতে পারেনি। সুতরাং তাদের জাতীয়তাবাদী আশা-আকাঙক্ষা অপরিতৃপ্ত হয়ে যায়। জার্মানীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছিল অসন্তোষের মূলকেন্দ্র। অধ্যাপকদের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রগণ বার্চেনস্যাফট (Burchenchaft) গড়ে জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক আদর্শ প্রচার করে যেতে শুরু করে। লিপজিগ-এর যুদ্ধের স্মৃতি উদ্যাপন করার জন্য ছাত্রগণ ওয়ার্টবার্গ (Wartburg) উৎসবের আয়োজন করে ও মেটারনিকের কুশপুত্তলিকা দাহ করে। কিছুদিনের মধ্যেই রাশিয়ার গুপ্তচর সন্দেহে কট্‌জেবু (Kotzebu) নামে এক সাংবাদিককে হত্যা করা হয়। মেটারনিক এইসব ঘটনাকে বিপ্লবী কার্যকলাপ মনে করে প্রাশিয়ার রাজা তৃতীয় ফ্রেডারিক ও জার্মানীর অন্যান্য রাজন্যবর্গকে সতর্ক করে দেন। মেটারনিক রাশিয়ার জার প্রথম আলে...

কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

ভুমিকা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর  ঠান্ডা যুদ্ধের (আরও পড়ুন) সময় আর একটি সংকট বিশ্বকে আণবিক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে দিয়েছিল, তা ছিল কিউবা সংকট। কিউবা হল ক্যারিবিয়ান সাগরে অবস্থিত পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে সর্ববৃহৎ দ্বীপ। দেশটি চিনি উৎপাদনের জন্য জগৎবিখ্যাত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত লাইন ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল এই দেশটির উপর। নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে কিউবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল ছিল। মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতায় ফ্যালজেনিকো বাতিস্তা ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে কিউবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ফিদেল কাস্ত্রোর ক্ষমতালাভ: বাতিস্তা সরকারের আমলে দেশে দারিদ্র্য, দুর্নীতি, অসাম্য, স্বৈরাচার প্রভৃতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। ফলে মার্কিন মদতপুষ্ট এই সরকারের প্রতি কিউবার জনগণের সমর্থন ছিল না। বাতিস্তা সরকারের অপদার্থতার সুযোগে ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে ১ জানুয়ারি ফিদেল কাস্ত্রো কিউবায় এক অভ্যন্তরীণ বিপ্লব ঘটিয়ে দেশের শাসন ক্ষমতা দখল করেন। কিউবাতে বেশ কিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এবং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে উদ্যোগী হলে আমেরিকার সাথে কিউবার বিরোধের সূচনা...

চীনের উপর আরোপিত বিভিন্ন অসম চুক্তিগুলির সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর।

ভুমিকা:  চীনে কিং বংশের রাজত্বকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান প্রভৃতি বহিরাগতশক্তিগুলি চীনকে বিভিন্ন যুদ্ধে পরাজিত করে অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির আধিপত্যের প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয় এবং চীনের ওপর বিভিন্ন শোষণমূলক চুক্তি চাপিয়ে দেয়। এই চুক্তিগুলি সাধারণভাবে অসমচুক্তি নামে পরিচিত। মোটামুটিভাবে 1839 খ্রি: থেকে 1949 খ্রি: পর্যন্ত চীনের সঙ্গে এর শোষণমূলক আচরণ চলতে থাকায় এই চুক্তিগুলিকে চীনের 'শতাব্দীব্যাপী অবমাননা' বলে চিহ্নিত করা হয়। অসম চুক্তিগুলির বৈশিষ্ট্য: অসম চুক্তিগুলির কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। (i) বিদেশি শক্তিগুলির কাছে পরাজিত চীন যে অসম চুক্তিগুলি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয় সেগুলি ছিল একতরফা চুক্তি। (ii) বিদেশি শক্তিগুলি অসম চুক্তিগুলির মাধ্যমে চীনে তাদের একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। (iii) পশ্চিমি শক্তিগুলি অসমচুক্তির মাধ্যমে চীনের সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট করে। (iv) বিভিন্নযুদ্ধে পরাজিত চীন যুদ্ধের জন্য একাই দায়ী ছিল না কিছু তা সত্ত্বেও পশ্চিমি শক্তিগুলি চীনের ওপর বিপুল পরিমান অর্থ ও সম্পদ ক্ষতিপূরণ হিসাবে দাবি করে। (v) বহিরাগত সাম্রাজ্য...