সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

পানিপথের প্রথম যুদ্ধের তাৎপর্য আলোচনা করো।

পানিপথের প্রথম যুদ্ধের গুরুত্ব/তাৎপর্য             ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপথের প্রথম যুদ্ধ ভারতের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসাবে গণ্য হয়। ১৫২৫ খ্রিস্টাব্দে বাবর সসৈন্যে কাবুল থেকে যাত্রা করে পাঞ্জাবে প্রবেশ করেন। যুদ্ধে দৌলত খাঁ পরাজিত হন। এর পর বাবর দিল্লি অভিমুখে যাত্রা শুরু করলে সুলতান ইব্রাহিম লোদি তাঁকে পানিপথের প্রান্তরে বাধা  দেন।  উভয়ের  মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ইব্রাহিম নিহত হন এবং বাবর যুদ্ধে জয়লাভ করেন। ভারতের ইতিহাসে পানিপথের প্রথম যুদ্ধ বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ । ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দের এই যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে ভারতের আদি মধ্যযুগের অবসান ঘটে এবং আধুনিক কালের আবির্ভাবের পূর্ব সূচনা ঘটে ।  প্রথমতঃ ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপথের প্রান্তরে দিল্লির শেষ সুলতান ইব্রাহিম লোদির সঙ্গে মুঘল বংশীয় কাবুলের অধিকর্তা বাবরের যুদ্ধ হয়। এই‌ যুদ্ধের ফলে সুলতান ইব্রাহিম লোদি পরাজিত এবং নিহত হন। সুলতানের মৃত্যুর সাথে সাথে দিল্লির সুলতানি শাসনের অবসান ঘটে। প্রায় ৩২০ বছরের স্থায়ী সুলতানি শাসনের অবসান ঘটার ফলে ভারতের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃত...

একজন ঐতিহাসিক হিসেবে আবুল ফজলের মূল্যায়ন করো ।

আবুল ফজল       ভারতবর্ষে মুসলমান শক্তির উদ্ভব ও প্রতিষ্ঠা যেমন রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন প্রবণতার সৃষ্টি করেছিল, তেমনি জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রেও নতুন এক যুগ বহন করে এনেছিল। মোগল যুগের ইতিহাসচর্চা বিশেষ করে দরবারী ইতিহাসের শ্রেষ্ট প্রতিনিধি ছিলেন আবুল ফজল। আকবরের মন্ত্রী, বন্ধু, রাষ্ট্রনেতা, কূটনীতিবিদ ও সামরিক অফিসার আবুল ফজল ইতিহাস রচনায় সিদ্ধহস্ত ছিলেন। শৈশবেই তিনি প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে ছিলেন। ১৫ বছর বয়সে তিনি জ্ঞানার্জনের সমস্ত শাখায় দক্ষতা লাভ করেন। নির্যাতিত ও অত্যাচারিত পরিবারের দুর্ভাগ্য আবুল ফজলের চিন্তার উপর গভীর ছাপ ফেলেছিল। মোগল সম্রাট আকবরের আশ্রয় ও পৃষ্টপোষকতা লাভ করার পর তিনি রচনা করেন দুটি বিখ্যাত গ্রন্থ-‘আকবরনামা’ ও ‘আইন-ই-আকবরী’।          মধ্যযুগের ভারতের ঐতিহাসিকদের মধ্যে আবুল ফজল ছিলেন সবচেয়ে প্রতিভাবান।‘আকবরনামা’-র দ্বিতীয় খন্ডে তিনি ইতিহাস ও ইতিহাস তত্ত্ব সম্পর্কে তাঁর মতামত রেখেছেন। পূর্বসূরীদের ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গীর সমালোচনা করতেও দ্বিধাবোধ করেননি। তিনি বলেছেন, ‘এদের কাছে ইতিহাস হল মুসলমানদের ভারত জয়, শাসন এবং...

একজন ঐতিহাসিক হিসেবে আবদুল কাদির বদায়ুনির মূল্যায়ন করো ।

আবদুল কাদির বদায়ুনি:             আকবর তথা মুঘল যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিকদের মধ্যে আবদুল কাদির বদায়ুনির নাম উল্লেখযোগ্য। ১৫০৪ খ্রিস্টাব্দে ফৈজাবাদের বদায়ুনে তাঁর জন্ম হয়। বদায়ুনির পিতা শেখ মুলুক শাহ ছিলেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। শৈশবে বদায়ুনি সম্ভালের শেখ হাতিমের কাছে শিক্ষালাভ করেন। ১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে পিতার মৃত্যুর পর বদায়ুনি আবুল ফজলের পিতা শেখ মুবারকের কাছে শিক্ষালাভ করেন। শৈশবেই ইতিহাসের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ জন্মেছিল। জীবনের অনেকটা সময় ইতিহাস পড়তে এবং লিখতে কাটিয়ে দিতেন। ১৫৭৪-৭৫ খ্রিস্টাব্দে আগ্রায় সর্বপ্রথম তিনি সম্রাট আকবরের দর্শন পান। এরপর আকবর তাঁর পান্ডিত্যে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে দরবারের ইমামের পদে বসান। ইতিহাসে বদায়ুনি আকবরের উদার ধর্মনীতির একজন কট্টর সমালোচক হিসাবে গণ্য হলেও মনে রাখতে হবে যে, আকবরের উৎসাহেই বদায়ুনি মহাভারতের ফার্সী অনুবাদ করেছিলেন। তবে তিনি গোঁড়া হলেও আবুল ফজলের মতোই উলেমাদের আত্মম্ভরিতা, ধর্মান্ধতা ও খারাপ ব্যবহার পছন্দ করতেন না। তিনি উলেমাদের বহু তর্কযুদ্ধে পরাজিত করেন। বদায়ুনি নিজে গোঁড়া ছিলেন কিন্তু সহানুভূতিহীন, হৃদয়হীন...

গ্যালিলিওকে কেন আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলা হয় ?

গ্যালিলিও গ্যালিলি     আধুনিক পরীক্ষামূক বিজ্ঞানের জনকরূপে সম্মানিত গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২ খ্রিস্টাব্দ) ইতালির পিসা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। সাধারণভাবে তিনি গ্যালিলিও নামে পরিচিত। বাল্যকাল থেকেই গ্যালিলিও অসাধারণ প্রতিভা ও মননশীলতার পরিচয় দেন। পুত্রের অসাধারণ মেধা ও প্রতিভার কথা স্মরণ করে গ্যালিলিওর পিতা তাঁকে বিজ্ঞান সাধনায় আত্মনিয়োগ করার প্রেরণা দেন এবং চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন করার জন্য তিনি পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এই সময় থেকেই তাঁর চিন্তাজগতে বিপ্লব দেখা দেয় এবং মধ্যযুগীয় গতানুগতিক চিন্তাধারার সঙ্গে তাঁর সংঘর্ষ শুরু হয়। তবে আর্থিক অসচ্ছলতার জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করতে বাধ্য হন। কিন্তু এই ঘটনার কিছুদিন পরেই তিনি আর্কিমিদিস- এর কাজের অনুকরণে এমন একটি নিক্তি তৈরি করেন যার দ্বারা মিশ্র ধাতু সমূহের মধ্যে কোন একটি উপাদানের পরিমাণ নির্ণয় করা যায়। ইতিপূর্বেই তিনি গির্জায় ঝুলন্ত বাতিগুলোর দোলায়মান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে দোলকের সূত্রগুলো আবিষ্কার করে সকলকে চমৎকৃত করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি গণিতশাস্ত্রে প্রভূত পাণ্ডিত্য অর্জন করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি ন...

আইজ্যাক নিউটন কিভাবে আমাদের বিশ্বচেতনা পরিবর্তন করেন ?

আইজ্যাক নিউটন   পৃথিবীর মহত্তম বিজ্ঞানীদের অন্যতম স্যার আইজ্যাক নিউটন (১৬৪২-১৭২৭ খ্রিস্টাব্দ) লিঙ্কনশায়ারের উলসথর্পে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যজীবনে তিনি মেধার বিশেষ কোন পরিচয় না দিলেও ট্রিনিটি কলেজে পড়ার সময় তিনি খুব সুখ্যাতি অর্জন করেন এবং ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে নিউটন ট্রিনিটি কলেজের ফেলে (Fellow) নির্বাচিত হন। ১৬৬৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তিনি বীজগণিতের দ্বিপদ উপপাদ্যটি (binomial theorem) প্রমাণ করেন এবং অন্তরকলন (differential calculus) এবং সমাকলন (integral calculus)-এর মূল পদ্ধতিগুলো আবিষ্কার করেন। ১৬৬৮ খ্রিস্টাব্দে নিউটন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতে লুকাসিয়ান প্রফেসর (Lucacian Professor of Mathematics) নিযুক্ত হন। এই সময় তিনি একটি প্রতিফলক দূরবীন (reflecting telescope) তৈরি করেন যাতে লেন্সের জায়গায় একটি প্রতিফলক ব্যবহার করেন। এই আবিষ্কারের জন্য তিনি লন্ডনের রয়াল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন। রয়াল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হওয়ার পরই তিনি তাঁর আলোর প্রকৃতি সম্পর্কে আবিষ্কারটির কথা সকলকে জানান। তিনি প্রমাণ করেন যে সদা সবরকম রঙেরী আলোর সংমিশ্রণ। নিউটনের এই আবিষ্কারের সম্পর্কে পণ্ডিত মহলেও বাদানুব...

আধুনিক বিজ্ঞানে কেপলারের অবদান কি ?

আধুনিক বিজ্ঞানে কেপলারের অবদান               জোহানেস কেপলার (১৫৭১-১৬৩০ খ্রিস্টাব্দ) জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একাধারে গণিতজ্ঞ, পদার্থবিজ্ঞানী এবং জ্যোতির্বিদ, তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানে গ্রহের গতি সম্বন্ধীয় সূত্রাবলীর আবিষ্কার হিসাবেই বিশেষভাবে পরিচিত। টুবিংগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময়ই তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞানে বিশেষত কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্বের প্রতি গভীরভাবে আকৃষ্ট হন। কর্মজীবনের প্রারম্ভে প্রাগে এসে টাইকো ব্রাহের সহকারীরূপে জ্যোতির্বিজ্ঞানে মনোনিবেশ করেন। টাইকো ব্রাহের অকালমৃত্যুর পর তাঁর দীর্ঘকাল যাবৎ গবেষণালব্ধ তথ্যাবলী হাতে পেয়েই সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার করার জন্য সচেষ্ট হন। এর পরেই কেপলার গ্রহদের উৎকেন্দ্রিক কক্ষপথের আকৃতি ও প্রকৃতি নির্ণয়ে যত্নবান হন। গ্রহের গতি সম্বন্ধীয় প্রথম নিয়মটি হল: “প্রতিটি গ্রহ সূর্যের চারদিকে এক-একটি উপাবৃত্তাকার পথে ঘোরে এবং সূর্য এই সব উপবৃত্তের একটি নাভিবিন্দুতে অবস্থিত।” কয়েকবছর পরে তাঁর দ্বিতীয় নিয়মটি আবিষ্কৃত হল: “সূর্য এবং গ্রহের সংযোগকারী সরলরেখা সমান সময়ে উপবৃত্তাকার ক্ষেত্রের সমান অংশ অঙ্কিত করে।”...

ইংল্যান্ডের ইতিহাসে এগারো বছরের স্বৈরাচারিতা কাকে বলে ?

ইংল্যান্ডের ইতিহাসে এগারো বছরের স্বৈরাচারিতা       রাজত্বের প্রথম চার বছরে (১৬২৫-১৬২৯ খ্রিস্টাব্দ) স্টুয়ার্ট বংশীয় রাজা প্রথম চার্লস চারবার পার্লামেন্ট আহ্বান করেন এবং প্রতিবারই তিনি পার্লামেন্টের সঙ্গে বিরোধে লিপ্ত হন। তারপর দীর্ঘ এগারো বছর তিনি পার্লামেন্ট আহ্বান না করেই শাসনকার্য পরিচালনা করেন। পার্লিয়ামেন্টের সঙ্গে তাঁর বিরোধের মূল কারণ ছিল সার্বভৌমত্ব ও শাসনকার্যের দায়িত্বের প্রশ্ন। ন্যায়ভাবেই হোক আর অন্যায়ভাবেই হোক পার্লিয়ামেন্ট শাসনকার্যের উপর অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা দাবি করে। অপরদিকে রাজা চার্লসও ন্যায়ভাবেই হোক আর অন্যায়ভাবেই হোক পার্লিয়ামেন্টের এই দাবি অগ্রাহ্য করার চেষ্টা করেন। ফলে উভয়পক্ষের মধ্যে বিরোধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। এই বিরোধ এড়াবার জন্য চার্লস পার্লিয়ামেন্ট আহ্বান না করেই শাসনকার্য পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেন। এর ফলে ১৬২১ থেকে ১৬৪০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পার্লিয়ামেন্টের কোন অধিবেশন বসেনি। ইংল্যান্ডে পার্লিয়ামেন্ট প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর কোনকালেই এত দীর্ঘদিন পার্লিয়ামেন্ট আহ্বান না করে শাসনকার্য পরিচালিত হয়নি। সেজন্য এই এগারো বছর পার্লিয়ামেন্টের কোন অধিবেশন ছাড়াই...

চৌথ, সরদেশমুখী এবং সরঞ্জাম শব্দের অর্থ ব্যাখ্যা করো।

চৌথ, সরদেশমুখী এবং  সরঞ্জাম : চৌথ ও সরদেশমুখী:   ভূমিরাজস্ব  ছাড়া  শিবাজি প্রবর্তিত দুটি কর ছিল চৌথ ও সরদেশমুখী। শিবাজি তাঁর বিরাট সেনাবাহিনীর জন্য আর্থিক সংস্থানের জন্য প্রতিবেশি অঞ্চল, বিজাপুর ও মুঘল অধিকৃত অঞ্চলের কয়েকটি জেলা থেকে ‘চৌথ’ ও ‘সরদেশমুখী’ নামে দুটি কর আদায়ের নীতি কার্যকর করেন। ‘চৌথ’ ছিল রাজস্বের এক-চতুর্থাংশ। ‘সরদেশমুখী’ ছিল এক-দশামংশ। যে সকল অঞ্চল স্বেচ্ছায় ‘চৌথ’ দিত না, তারা মারাঠা অশ্বারোহী সেনার দ্বারা আক্রান্ত ও লুন্ঠিত হত। আসলে মারাঠা আক্রমণ থেকে নিষ্কৃতিলাভের জন্য ‘নিষ্কৃতি কর’ হিসাবে চৌথ ও সরদেশমুখী পরিগণিত হয়। ঐতিহাসিক রাণাডের মতে, অন্য কোনো তৃতীয় শক্তির আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য প্রতিবেশী রাজ্য থেকে এই কর আদায় করা হত। কিন্তু সরদেশাই লিখেছেন, শত্রু বা বিজিত রাজ্য থেকে ‘চৌথ’ ও ‘সরদেশমুখী’ আদায় করা হত। কিন্তু স্যার যদুনাথ সরকার এই মতের বিরোধিতা করে বলেছেন, ‘চৌথ’ ও ‘সরদেশমুখী’ কর যে অঞ্চল থেকে আদায় করা হত সেই অঞ্চল মারাঠা আক্রমণ থেকে নিষ্কৃতি পেত। তিনি শিবাজির ‘চৌথ’ ও ‘সরদেশমুখী’ কর আদায়কে লুণ্ঠন বলে মনে করেন। তাঁর মতে, শিবাজির ‘চৌথ’ ও ‘সরদেশমুখী’ ...

সিংহাসনে আরোহণ করার পর হুমায়ুনকে কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল ?

সিংহাসনে আরোহণ করার পর হুমায়ুনের সমস্যা     মুঘল সম্রাট বাবরের মৃত্যুর চারদিন পর অর্থাৎ ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর তাঁর জেষ্ঠপুত্র হুমায়ুন দিল্লীর সিংহাসনে বসেন।  ‘হুমায়ুন’ শব্দের অর্থ ‘ভাগ্যবান’। কিন্তু ভাগ্যের নিমর্ম পরিহাসে হুমায়ুনের সমগ্র জীবনটাই নানাবিধ সমস্যায় দুর্ভাগ্যপূর্ণ ছিল। তিনি ১৫০৮ খ্রিস্টাব্দে ৬ই মার্চ কাবুলে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মাতা ছিলেন মহিম বেগম। পিতা বাবর মৃত্যুশয্যায় হুমায়ূনকে সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী মনোনীত করে যান। হুমায়ুনের সমস্যাসমূহঃ সিংহাসনে বসেই হুমানয়ুন নানাবিধ কঠিন ও জটিল সমস্যার সম্মুখীন হন। কেননা পিতা বাবরের কাছ থেকে তিনি যে সিংহাসন লাভ করেছিলেন, তা নিষ্কণ্টক ছিল না। প্রথমত: জ্যেষ্ঠ পুত্র সিংহাসনের অধিকারী হবেন এমন রীতি-তৈমুর বংশে প্রচলিত ছিল না। তাঁর অন্যান্য ভ্রাতা ও আত্মীয়রা সিংহাসনের উপর তাঁদের দাবী জানাতে থাকে। ফলে সিংহাসন দিয়ে জটিল বিরোধ দেখা দেয়। দ্বিতীয়তঃ বাবরের ভ্রান্ত অর্থনীতি, ক্রমাগত যুদ্ধ বিগ্রহ ও অমিতব্যয়িতার জন্য রাজকোষ শূন্য ছিল। ফলে হুমায়ুন প্রবল অর্থসংকটে ছিলেন। তৃতীয়তঃ , হুমায়ুনের চরিত্রে সারল্য, কৃত...

গৌরবময় বিপ্লব কি বৈপ্লবিক ঘটনা ছিল?

গৌরবময় বিপ্লব       রজবংশের শেষ রাজ দ্বিতীয় জেমসের সিংহাসন ত্যাগ এবং তৃতীয় উইলিয়াম ও রানী মেরীর ইংল্যান্ডের সিংহাসন আরোহণের ঘটনা ১৬৮৮ খ্রিস্টান্সের রক্তহীন বিপ্লব বা গৌরবময় বিপ্লব নামে পরিচিত। স্টুয়ার্ট রাজবংশের সিংহাসন লাভের এর পর থেকে ইংল্যান্ডের ইতিহাসে যে রাজনৈতিক জটিল প্রশ্ন দেখা দেয় এই বিপ্লবের ফলে তার অবসান ঘটে। রাজমুকুট ও পার্লামেন্টের সংঘর্ষে শেষ পর্যন্ত পার্লিয়ামেন্ট জয়লাভ করে। প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য ও উদ্দেশ্যের দিক থেকে বিচার করলে ১৬৮৮ খ্রিস্টাব্দের ইংল্যান্ডের বিপ্লবের সঙ্গে তুলনীয় কোন বিপ্লব ইয়োরোপের ইতিহাস আর কোথাও ঘটেনি। এই বিপ্লব ছিল রক্তপাতহীন এবং এর লক্ষাও ছিল প্রচণ্ড সংরক্ষণশীল। হুইগ ও টোরি নেতৃবৃন্দ অর্থাৎ যারা এই বিপ্লবের পটভূমিকা রচনা করেন এবং এই বিপ্লবকে সাফল্যমণ্ডিত করে তোলার দায়িত্ব গ্রহণ করেন তাঁরা কেউ মৌলিক সংস্কার সাধনের মাধ্যমে বা রাজনৈতিক মতবাদ বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে ইংল্যান্ডের শাসনব্যবস্থার কোন পরিবর্তন করতে আগ্রহী ছিলেন না। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল খুবই সীমিত। প্রকৃতপক্ষে রাজা দ্বিতীয় জেমস সংবিধানের কতকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ধারাকে ধবংস করতে চেয়েছ...