সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

চীনের উপর আরোপিত বিভিন্ন অসম চুক্তিগুলির সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর।

ভুমিকা:  চীনে কিং বংশের রাজত্বকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান প্রভৃতি বহিরাগতশক্তিগুলি চীনকে বিভিন্ন যুদ্ধে পরাজিত করে অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির আধিপত্যের প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয় এবং চীনের ওপর বিভিন্ন শোষণমূলক চুক্তি চাপিয়ে দেয়। এই চুক্তিগুলি সাধারণভাবে অসমচুক্তি নামে পরিচিত। মোটামুটিভাবে 1839 খ্রি: থেকে 1949 খ্রি: পর্যন্ত চীনের সঙ্গে এর শোষণমূলক আচরণ চলতে থাকায় এই চুক্তিগুলিকে চীনের 'শতাব্দীব্যাপী অবমাননা' বলে চিহ্নিত করা হয়।

অসম চুক্তিগুলির বৈশিষ্ট্য: অসম চুক্তিগুলির কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। (i) বিদেশি শক্তিগুলির কাছে পরাজিত চীন যে অসম চুক্তিগুলি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয় সেগুলি ছিল একতরফা চুক্তি। (ii) বিদেশি শক্তিগুলি অসম চুক্তিগুলির মাধ্যমে চীনে তাদের একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। (iii) পশ্চিমি শক্তিগুলি অসমচুক্তির মাধ্যমে চীনের সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট করে। (iv) বিভিন্নযুদ্ধে পরাজিত চীন যুদ্ধের জন্য একাই দায়ী ছিল না কিছু তা সত্ত্বেও পশ্চিমি শক্তিগুলি চীনের ওপর বিপুল পরিমান অর্থ ও সম্পদ ক্ষতিপূরণ হিসাবে দাবি করে। (v) বহিরাগত সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি অসমচুক্তিগুলির মাধ্যমে চীনে বানিজ্যিক সুযোগ সুবিধা আদায় করে।


বিভিন্ন অসম চুক্তি: 

চীনের ওপর আরোপিত বিভিন্ন অসম চুক্তিগুলি হল-

নানকিং -এর অসম চুক্তি: প্রথম আফিমের যুদ্ধে ব্রিটিশদের কাছে চীন পরাজয়ের পর নানকিং-এর অসমচুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয় (29 আগস্ট, 1824 খ্রি:)। এই সন্ধির দ্বারা (i) চীনের পাঁচটি বন্দর-ক্যান্টন, সাংহাই, অ্যাময়, ফুচাও, নিংগপো ইউরোপীয় বনিকদের বানিজ্য ও বসবাসের জন্য খুলে দেওয়া হয়। যা চুক্তিবন্দর নামে খ্যাত। (ii) এই বন্দরগুলিতে ইউরোপীয়রা নিজ নিজ কনসাল নিয়োগ করতে থাকে। (iii) হংকং বন্দর চিরকালের জন্য ইংরেজদের ছেড়ে দেওয়া হয় এবং চীনের সর্বত্র ইংরেজ বনিকদের পণ্য ক্রয় বিক্রয়ের অধিকার স্বীকৃত হয়। (iv) কোহং প্রথা বাতিল হয়। (v) চীনে ব্রিটিশ আমদানি-রপ্তানি পন্যের ওপর 5% শুল্ক ধার্য হয়। (vi) ক্যান্টন বন্দরে ইংরেজদের আফিম ধ্বংস করার জন্য চীন সরকার ইংরেজদের 6 মিলিয়ন, যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ 12 মিলিয়ন এবং কোহং বণিকদের খান পরিকোত্বের জন্য 3 মিলিয়ন রোপ্য ডলার দিতে বাধ্য হয়।

বগ-এর চুক্তি: (1843 খ্রি: ৪ই অক্টোবর বগ-এর চুক্তির মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার চীনের কাছ থেকে কিছু অতিরাষ্ট্রিক অধিকার লাভ করে । এই সন্ধির দ্বারা (i) চীনের 'চুক্তি বন্দর' গুলিতে বসবাসকারী চীনা ও ব্রিটিশ নাগরিকদের ওপর ব্রিটিশ আইন ও বিচারব্যবস্থা কার্যকর হবে। (ii) চীন সরকার অন্য বিদেশিদের যে সব সুযোগ সুবিধা দেবে ব্রিটেনকেও তা দিতে বাধ্য থাকবে।

ওয়াংঘিয়ার অসম চুক্তি: 1844 খ্রি: 3 জুলাই মার্কিনযুক্ত রাষ্ট্র চীনের সঙ্গে ওয়াংঘিয়া চুক্তির মাধ্যমে চীনে বিভিন্ন অতিরাষ্ট্রিক সুবিধা লাভ করে।

হোয়ামপোয়া-র অসম চুক্তি: 1844 খ্রি: 24 অক্টোবর এই চুক্তি ফ্রান্স ও চীনের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়। এর দ্বারা (ⅰ) ফরাসি বণিকরা চীনে নতুন পাঁচটি বানিজ্যের সুবিধা পায়। (ii) ফ্রান্স চীনে অতিরাষ্ট্রিক সুবিধা লাভা করে। (iii) চীন ও ফ্রান্সের মধ্যে বানিজ্য শুল্ক নির্দিষ্ট হয়।

আইগুন-এর সন্ধি: এই সন্ধি রাশিয়া ও চীনের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়। এর দ্বারা (i) রাশিয়া চীনের উত্তরাংশের কিছু ভূখন্ডে নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে। (ii) আমুর, উসুরি ও সংখুয়াজিয়াং নদীতে রাশিয়া ও চীনের নৌচলাচল একমাত্র স্বীকৃত হয়।

টিয়েনসিনের অসম চুক্তি: দ্বিতীয় অহিফেন যুদ্ধে পরাজয়ের পর চীনের সঙ্গে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স এই চুক্তি স্বাক্ষর করে (1858)। এই সন্ধির দ্বারা (i) ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স চীনকে প্রচুর ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করে। (ii) বিদেশি বণিকদের জন্য আরও ১১ টি বন্দর খুলে দেওয়া হয়। (iii) রাজধানী পিকিং-এ বিদেশি দূতাবাস স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হয়। (iv) বিদেশি ছাড়পত্রের মাধ্যমে অবাধ ভ্রমন ও খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারের অধিকার লাভ করে। (v) বিদেশি বাণিকদের সুবিধার্থে বাণিজ্য শুল্ক হ্রাস করা হয়। (vi) চীনে আফিমের ব্যবসা বৈধ বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয় শুল্কের বিনিময়ে। (vii) বিদেশি বণিকরা চীনে অতিরাষ্ট্রিক অধিকার লাভ করে।

পিকিং-এর সন্ধি: টিয়েনসিনের সন্ধির শর্তগুলি যথেষ্ট ছিল না বলে ফ্রান্স ও ব্রিটেন মনে করে। এর ফলে তারা চীনের সঙ্গে 1860 খ্রি: পিকিং এর চুক্তি স্বাক্ষর করে আরও কিছু সুযোগ সুবিধা লাভ করে।

শিমনোশেকি-র-সন্ধি: কোরিয়াকে কেন্দ্র করে চীন-জাপান যুদ্ধ শুরু হলে চীন জাপানের হাতে পরাজিত হয়ে। 1895 খ্রি: চীন শিমনোশোকি-র সন্ধি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়। এর দ্বারা (i) চীন কোরিয়াকে স্বাধীনতা দানে বাধ্য হয়। (ii) চীনের কাছ থেকে জাপান পোর্ট আর্থার সহ বেশ কিছু উপদ্বীপ লাভ করে। (iii) চীন জাপানকে প্রচুর ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয়। (iv) জাপান চীনের বেশ কিছু বন্দরে ব্যবসা বাণিজ্যের সুবিধা লাভ করে।

        জাপানের চীনে প্রভাব বিস্তারকে রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স ভাল চোখে দেখেনি। তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ফলে জাপানকে তারা লিয়াও টুং উপদ্বীপ ও পোর্ট আর্থার চীনকে ফেরত দিতে বাধ্য করে। (1) ইউরোপীয় শক্তিগুলি চীনের বিভিন্ন কিইয়াং ও দক্ষিণ চীনে, (ii) জার্মানি শাংটুং, হত্যা কাও এবং টিয়েনসিনে (iii) রাশিয়া মাঞ্চুরিয়া ও বহিশদোলিয়ায় (iv) ফ্রান্স ইউনান, কোয়াংটুং তাবলে (v) জাপান ফুকিয়েন অঞ্চলে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে 'চীন তরমুজকে খন্ডবিখন্ড করে দেয়।'

বক্সার প্রোটোকল: চীনে ইউরোপীয়দের শোষণ, নির্যাতন ও আধিপত্যের বিরুদ্ধে আই-হো-চুয়ান নামে একটি গুপ্ত সমিতি-বক্সার বিদ্রোহ শুরু করে (1899-1961 খ্রি:)। বিদ্রোহীরা বিদেশিদের হত্যা, রেলপথ, টেলিগ্রাফ, গীর্জা ধ্বংস করতে থাকে। এমনকি তারা বিদেশি দূতাবাসগুলি অবরোধ করে ও কর্মীদের উপর অত্যাচার শুরু করে। এতে বিদেশি শক্তিগুলি আতঙ্কিত হয়ে আটটি দেশের মিলিত বাহিনী বিদ্রোহ দমন করে। চীনা সাম্রাজ্ঞী জু-সি পাত্রমিত্র সহ পিকিং ত্যাগ করেন। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পর 1901 খ্রিঃ 7 সেপ্টেম্বর 11 টি বিদেশি শক্তি বক্সার প্রোটোকল নামে এক চুক্তির মাধ্যমে চীনের ওপর বিভিন্ন কঠোর নীতি চাপিয়ে দেয়।

       বক্সার প্রোটোকলের শর্তানুসারে (i) বিদ্রোহের সঙ্গে যুক্ত 12 জন রাজপুরুষকে প্রানদণ্ডে দণ্ডিত করা হয় এবং শতাধিক রাজপুরুষকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। (ii) চীনের 125টি রেলস্টেশন বিদেশি সেনাদের দখলে আসে এবং 25টি দুর্গ ভেঙে ফেলা হয়। (iii) পিকিংএ স্থায়ী বিদেশি সোনা মোতায়েন হয় বিদেশি দূতাবাস রক্ষার্থে। (iv) চীনে দু-বছরের জন্য অস্ত্রনির্মাণ ও আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং প্রচুর পরিমাণে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ চাপিয়ে দেওয়া হয়। (v) বিদেশি বণিকদের কাছ থেকে 5% এর বেশি শুল্ক ধার্য করা হবে না বলা হয়।

         1917 খ্রি: রুশ বিপ্লবের পর রাশিয়া চীনের উপর থেকে সবরকমের সুযোগ-সুবিধা ত্যাগ করে। 1928 খ্রি: পর থেকে চীন বিদেশিদের কাছ থেকে শুল্ক আদায়ে সক্ষম হয়। যদিওে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সের মত শক্তিধর রাষ্ট্রগুলি অন্তত: 1946 খ্রি: পর্যন্ত চীনের কাছ থেকে তাদের অধিরাষ্ট্রিক সুযোগ-সুবিধা আদায় করেছিল। বস্তুত: চীনের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমেই ইংল্যান্ড 1997 খ্রি: হংকং এবং পোর্তুগাল 1999 খ্রি: ম্যাকাও এর দাবি ত্যাগ করে।



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ক্রিপস মিশন কেন ভারতে এসেছিল ? ক্রিপস মিশনের প্রস্তাব‌ গুলি কী ছিল ? এক্ষেত্রে ভারতীয়দের কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল ?

সূচনা : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ভারতের ব্রিটিশ সরকার ভারতবাসীর আর্থিক ও সামরিক সাহায্য প্রার্থনা করে। যদিও কংগ্রেস এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়, ফলে এক রাজনৈতিক অচলাবস্থা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ মন্ত্রীসভার সদস্য স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসের নেতৃত্বে ক্রিপস মিশন ভারতে আসে (১৯৪২ খ্রি.) ও এক প্রস্তাব পেশ করে যা ক্রিপস প্রস্তাব নামে পরিচিত। ক্রিপস্ প্রস্তাব সম্পর্কে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল বলেছিলেন—আমাদের সততা প্রমাণের জন্যই ক্রিপস মিশন অপরিহার্য ('The Cripps Mission is indispensable to prove our honesty of purpose') ! পটভূমি / কারণ    ক্রিপস্ মিশনের ভারতে আসার পটভূমি বা কারণগুলি হলো –  [1] জাপানি আক্রমণ প্রতিরোধ : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন (১৯৪১ খ্রি., ৭ ডিসেম্বর) জাপান হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের পার্লহারবারে অবস্থিত মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করে অক্ষশক্তির পক্ষে যুদ্ধে যোগদান করলে বিশ্ব রাজনীতিতে এক গুরুতর পরিবর্তন ঘটে। একে একে ফিলিপাইন, ইন্দোচিন, ইন্দোনেশিয়া, মালয় ও ব্রহ্মদেশ বিধ্বস্ত করে (১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ মার্চ) জাপান ভারতের নিকটে এসে হাজ...

ম্যানর ব্যবস্থা বলতে কি বোঝ ?

ম্যানর ব্যবস্থা        সামন্ততন্ত্রের ভিতর থেকে তার আবশ্যিক অঙ্গ হিসাবে ম্যানর প্রথার বিকাশ ঘটেছিল। ম্যানর প্রথা প্রকৃতপক্ষে সামন্তযুগের কৃষিভিত্তিক সমাজে একটি অর্থনৈতিক সংগঠন, একে সামন্ততান্ত্রিক উৎপাদন পদ্ধতির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ম্যানর প্রথা অনেক সময় সিনোরীয় প্রথা নামেও পরিচিত। মূলত সামন্ততন্ত্রে ভূস্বামী কর্তৃক কৃষক শোষণের যে পরিকাঠামো গড়ে উঠেছিল ম্যানর প্রথা ছিল তারই সাংগঠনিক ভিত্তি। সামন্তপ্রভু এবং ম্যানরে বসবাসকারী শ্রমজীবী মানুষের খাদ্যের জোগান আসত ম্যানর থেকে।        ম্যানরের অভ্যন্তরীণ কাঠামো ছিল বৈচিত্র্যপূর্ণ। একটি ম্যানরের জমিকে দুইভাগে ভাগ করা হত—(1) সামন্তপ্রভুর খাস জমি বা ডিমেইনে, (2) স্বাধীনস্বত্বসম্পন্ন জমি বা ভিলেইন। এই জমির মাধ্যমে কৃষক সামন্তপ্রভুর সঙ্গে একটি অচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ থাকত। সামন্ততন্ত্রের মতো ম্যানর প্রথার উৎস রয়েছে প্রাচীন রোমান ও জার্মানদের স্থানীয় সংগঠনের মধ্যে। ম্যানর প্রথার প্রধান শক্তি ছিল ভূমিদাস। এই ভূমিদাসরা আক্রমণকারী যোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে ভূমিদাসে রূপান্তরিত হয়। ...

মার্কেন্টাইল বাদ কি ? এর বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি ?

মার্কেন্টাইলবাদ মার্কেন্টাইল বিখ্যাত ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ অ্যাডম স্মিথ তার লেখা বিখ্যাত গ্রন্থ “ওয়েল্থ্ অব নেশনস' (Wealth of Nations)- এ ‘মার্কেন্টাইলবাদ' (Mercantilism) কথাটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন। মার্কেন্টাইলবাদীদের ধারণায় পৃথিবীতে সম্পদের পরিমাণ সীমিত। এই মতবাদের মূল কথা হল সংরক্ষণবাদী অর্থনীতি অনুযায়ী বলা হয় এই মতবাদ মেনে বিদেশি পণ্য আমদানি কমানোর জন্য আমদানি শুল্ক বাড়ানো হত। এই মতবাদের মূল লক্ষ্য হল দেশ স্বনির্ভর ও সমৃদ্ধশালী করে তোলার জন্য নিজ দেশের সোনা রুপোর মতো মূল্যবান ধাতুর সঞ্চয় বাড়ানো। মূল বক্তব্যসমূহ বা বৈশিষ্ট্যসমূহ আর্থিক জাতীয়তাবাদ: ষোলো থেকে আঠারো শতকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি রাষ্ট্রের অধীনে আসে। অর্থাৎ রাষ্ট্র অর্থনীতির মূল নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠে। বণিকদের স্বার্থে গড়ে ওঠা গিল্ডগুলির বদলে রাষ্ট্র বণিক ও বাণিজ্য বিষয়গুলির দেখাশোনা শুরু করে। রাষ্ট্রের স্বার্থের সঙ্গে বণিক ও উৎপাদকের স্বার্থকে এক দৃষ্টিতে দেখা শুরু হয়। ফলে জাতীয়তাবাদী স্বার্থরক্ষার উদ্দেশ্যে অর্থনীতি পরিচালিত হতে শুধু করে, যার নাম হয় অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ। মূল্যবান ধাতুর ওপর গু...