স্কন্দগুপ্তের কৃতিত্ব বা হুন প্রতিরোধে স্কন্দগুপ্তের ভূমিকা
গুপ্ত সাম্রাজ্যের শেষ শক্তিশালী রাজা ছিলেন স্কন্দগুপ্ত। পিতা প্রথম কুমারগুপ্তের মৃত্যুর পর তিনি সিংহাসনে বসেন। জুনাগড় লিপি ও ভিতারি স্তম্ভলিপি থেকে স্কন্দগুপ্তের কার্যাবলির বিবরণ পাওয়া যায়।
পুষ্যমিত্র আক্রমণ
স্কন্দগুপ্ত, পিতা প্রথম কুমারগুপ্তের শাসনকালের শেষদিকে পুষ্যমিত্র ও বাকাটক রাজ্যের জোটের আক্রমণকে প্রতিহত করে সাম্রাজ্যকে রক্ষা করেছিলেন। ৪৫৭ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণের পর স্কন্দগুপ্তের অন্যতম কৃতিত্ব ছিল হুন আক্রমণ প্রতিহত করা।
হুন আক্রমণ
ভিতারি স্তম্ভলিপি থেকে জানা যায়, শ্বেতহুন নামক গোষ্ঠী গুপ্ত সাম্রাজ্যের ওপর আক্রমণ চালায়। গুপ্ত সম্রাটরা উত্তর-পশ্চিম সীমান্তকে সুরক্ষিত করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করার ফলে সহজেই হুনরা ভারত আক্রমণ করে। স্কন্দগুপ্ত এই হুনদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এবং শেষপর্যন্ত হুনদের পরাজিত করে গুপ্ত সাম্রাজ্যকে পুনরায় সুরক্ষিত করেন। হুন আক্রমণ প্রতিহত করে তিনি 'বিক্রমাদিত্য' উপাধি গ্রহণ করেন। এই আক্রমণ থেকে ভারতকে রক্ষা করার জন্য ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার স্কন্দগুপ্তকে "ভারতের রক্ষাকারী' বলে অভিহিত করেছেন।
অন্যান্য কৃতিত্ব
শুধু সেনাপতি হিসেবেই নয় শাসক হিসেবেও স্কন্দগুপ্ত কৃতিত্ব দেখান। কৃষির উন্নতির জন্য জলসেচের ব্যবস্থা করেন। শিক্ষার উন্নতির জন্য নালন্দায় একটি বিহার স্থাপন করেন। কিন্তু ধারাবাহিক যুদ্ধের ফলে গুপ্ত সাম্রাজ্যের আর্থিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক শক্তি কার্যত স্বাধীন হয়ে যায়। অবশ্য স্কন্দগুপ্তের জীবদ্দশায় গুপ্ত সাম্রাজ্য অটুট অবস্থায় ছিল।