ম্যানর ব্যবস্থা সামন্ততন্ত্রের ভিতর থেকে তার আবশ্যিক অঙ্গ হিসাবে ম্যানর প্রথার বিকাশ ঘটেছিল। ম্যানর প্রথা প্রকৃতপক্ষে সামন্তযুগের কৃষিভিত্তিক সমাজে একটি অর্থনৈতিক সংগঠন, একে সামন্ততান্ত্রিক উৎপাদন পদ্ধতির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ম্যানর প্রথা অনেক সময় সিনোরীয় প্রথা নামেও পরিচিত। মূলত সামন্ততন্ত্রে ভূস্বামী কর্তৃক কৃষক শোষণের যে পরিকাঠামো গড়ে উঠেছিল ম্যানর প্রথা ছিল তারই সাংগঠনিক ভিত্তি। সামন্তপ্রভু এবং ম্যানরে বসবাসকারী শ্রমজীবী মানুষের খাদ্যের জোগান আসত ম্যানর থেকে। ম্যানরের অভ্যন্তরীণ কাঠামো ছিল বৈচিত্র্যপূর্ণ। একটি ম্যানরের জমিকে দুইভাগে ভাগ করা হত—(1) সামন্তপ্রভুর খাস জমি বা ডিমেইনে, (2) স্বাধীনস্বত্বসম্পন্ন জমি বা ভিলেইন। এই জমির মাধ্যমে কৃষক সামন্তপ্রভুর সঙ্গে একটি অচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ থাকত। সামন্ততন্ত্রের মতো ম্যানর প্রথার উৎস রয়েছে প্রাচীন রোমান ও জার্মানদের স্থানীয় সংগঠনের মধ্যে। ম্যানর প্রথার প্রধান শক্তি ছিল ভূমিদাস। এই ভূমিদাসরা আক্রমণকারী যোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে ভূমিদাসে রূপান্তরিত হয়। ...
ভাস্কো-দ্য-গামা ১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দে অটোমান তুর্কীগণ পূর্ব রোম সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্ত্যান্তিনোপল জয় করে নেয়। এর ফলে প্রাচ্য জগতের সঙ্গে ইউরোপের বাণিজ্যিক যোগাযোগের স্থলপথগুলো সম্পূর্ণভাবে মুসলিম শক্তির কর্তৃত্বাধীন হয়ে পড়ে। ফলে ইউরোপের বণিক সম্প্রদায় অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং জলপথে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য তারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে। এই সময় সামুদ্রিক শক্তি হিসাবে পোর্তুগাল যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল এবং পোর্তুগালের শাসনকর্তাগণও এই ব্যাপারে খুব উৎসাহী ছিলেন। ১৪১৭ খ্রিস্টাব্দে ভাস্কো-দ্য-গামা নামে এক পোর্তুগীজ নাবিক আফ্রিকার উপকূল অতিক্রম করে ভারতবর্ষের সঙ্গে যোগাযোগের নতুন পথ আবিষ্কার করতে উদ্যোগী হন। ভাস্কো-দ্য-গামা ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে উত্তমাশা অন্তরীপ অতিক্রম করে দক্ষিণ ভারতের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত কালিকট বন্দরে উপস্থিত হন। কালিকটের রাজা জামোরিন সেই সময় তাকে কোন বাণিজ্য কুঠি স্থাপনের অনুমতি দেননি। কিন্তু ইউরোপ থেকে ভারতে আসার জলপথ আবিষ্কার করে ভাস্কো-দ্য-গামার মনে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি হয় এবং ভৌগোলিক...